ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

লাখের কমে কথা নেই টেকনাফ থানায়

Tofaiel_1তোফায়েল আহমদ ::
টেকনাফ সীমান্তের অনেক সচেতন ব্যক্তি আশা করেছিলেন-এরকম প্রতিবেদনটি সংবাদপত্রে (দৈনিক কালের কন্ঠ ও দৈনিক আজকের দেশবিদেশ, ৭, ৮ ও ৯ জুলাই’১৭) আরো অনেক আগেই প্রকাশ পাওয়া দরকার ছিল। কেননা ভুক্তভোগিরা জানিয়েছেন, সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরই ইতিমধ্যে টেকনাফ থানার গণহারে গ্রেফতার বাণিজ্য থমকে গেছে। তবে একেবারে বন্ধ হয়েছে এটা বলা যাবেনা। বাস্তবে প্রতিবেদন প্রকাশে একটু বিলম্ব হয়ে গেছে। সঠিক, তাৎক্ষনিক এবং বিশ্বাস ও প্রমাণযোগ্য তথ্যের অভাবই বিলম্বের কারণ। এজন্য ভুক্তভোগিদের কাছে দুঃখ প্রকাশে লজ্জা নেই। কেননা পেশায় যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য।

একুশ বছরের রাশেদ দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেই মামার দোকানে বসে গেছে। টেকনাফের গনি মার্কেটের ছালেহা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের সাথে বিকাশের দোকান। গতরাতে টেকনাফের একজন সংবাদকর্মী জানান-দোকানটির স্বত্বাধিকারীও মিয়ানমারের আদি রোহিঙ্গা। ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল বিকাশ ও রকেট বিকাশের অনুমোদিত এজেন্ট দোকানটি-এ তথ্য রাশেদের। বিকাশের এই দোকানে গত ৫ জুলাই রাত ৮টার দিকে ঝটিকা হানা দেয় টেকনাফ থানার এসআই মনোয়ারের দলটি। দোকানের বিকাশকর্মী রাশেদকে ধরে এসআই মনোয়ার মাইক্রোতে তুলে রকেট গতিতে ছুটেন থানায়।

ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী পরের দিন বিষয়টি আমাকে জানান। সেই প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য ছিল থানার এসআই বোরহান এঘটনা ঘটিয়েছেন। আমি পরের দিন বৃহষ্পতিবার যথারীতি এসআই বোরহানের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি তখন কক্সবাজারের আদালতে স্বাক্ষী দিতে উপস্থিত ছিলেন। এসআই বোরহান আমাকে জানান, বুধবার রাতে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাই তিনি অপারেশনে বের হননি। তবে থানার এসআই মনোয়ার গনি মার্কেটের বিকাশ দোকানের অপারেশনটি চালিয়েছিলেন।

আমি এ বিষয়ে থানার ওসি’র সাথে কথা বলেছি। ওসিও নিশ্চিত করেছেন, এসআই বোরহান বিকাশ কর্মী রাশেদকে ধরে নিয়ে যাবার কথা। ওসি আমাকে আরো একটি নতুন তথ্য যোগ করে জানান-থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া বিকাশ কর্মী রাশেদ স্থানীয় একজন ছাত্রলীগ নেতার আতœীয়। তাই পরে নেতার জিন্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রবিবার বিকালে টেকনাফের সাবরাং সিকদার পাড়ার আবদুল জলিলের পুত্র বিকাশকর্মী রাশেদের সাথে আলাপ হয়। রাশেদ জানায়-এসআই মনোয়ার তাকে এমনভাবে ঝাপটা মেরে কালো গ্লাসের মাইক্রোতে তুলেছিল যেন চিলে মুরগির বাচ্ছা ধরার মত। যথারীতি নতুন থানা ভবনে নিয়ে তার চোখ বেঁধে একটি কক্ষে আটকিয়ে রাখা হয়। থানার পরিবেশ পরিস্থিতিকে এসময় এমন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় যেন দেশে এক ভয়ংকর মার্শাল’ল চলছে। এটা করা হয় চলমান ‘গ্রেফতার বাণিজ্য’ নিয়ে ভয়ে যাতে কেউ প্রতিবাদেরও সাহস না করে।

রাশেদকে তুলে নিয়ে যাবার খবর পাবার পর তার মামারা তদবিরে গেলেন থানায়। এসআই মনোয়ার রাশেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন অত্যন্ত গুরুতর। বললেন-বিকাশে মানি লন্ডারিংএর অপরাধ করা হচ্ছে। তাই তাকে আটক করা। এবার দাবি করা হল মানি লন্ডারিং এর জন্য নগদ ৫ লাখ টাকা।

রাশেদ গতকাল আরো জানায়-দাবি করা টাকা আদায়ের কৌশল হিসাবে পুলিশ ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থানায় মওজুদ করে রাখা ইয়াবার পুটলি ঘন ঘন নড়াচড়া করে। এসময় আরো বলে-অন্যথায় এই টেবলেটের সাথে চালান হবে চোখবাঁধা তরুন রাশেদ। দরদাম করে শেষ পর্যন্ত বিকাশ কর্মী রাশেদের দাম উঠল দুই লাখ টাকায়।

চোখের কাপড় খুলে দেয়া হল। মাত্র দুই লাখে থানা থেকে মানি লন্ডারিং মুক্তি পেল। এ ঘটনায় ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত রাষ্ট্রের কি লাভ হল ? জনগনের ট্যাক্সের মাসিক বেতনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ করার দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এরিমধ্যে বেতনও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশী। কিন্তু আলোচিত ঘটনায় মনে হচ্ছে মানি লন্ডারিং কে (সত্যি যদি অপরাধ হয়ে থাকে) উল্টো উৎসাহিত করা হল। পুলিশ যদি সত্যিই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে অপারেশন করত তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলের আলামত জব্দ করত এবং সাক্ষীও থাকত। ¯্রফে রাশেদকে এনে চোঁখ বেঁধে ইয়াবা নিয়ে চালানের হুমকিতেই নগদ দুই লাখ টাকা। লাখ টাকার কমে কোন কথাও সেখানে নেই বহুদিন ধরে।

এবারের ঘটনাস্থলও টেকনাফ থানার বন্দিশালা। টেকনাফ থানা সংলগ্ন জীপ ষ্টেশনের বিকাশ মোবাইল দোকানী নুরুল মোস্তফাকে তুলে নেওয়া হল। থানার ক্যাশিয়ার আলমগীর এবং এসআই রহিম মোস্তফাকে নিয়ে থানা ভবনের তিনতলার একটি কক্ষে আটকিয়ে রাখে। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে হুমকি দিয়ে বলে-উখিয়ায় ইয়াবার যে চালান ধরা পড়েছে সেখানে আপনার নাম এসেছে। তাই ইয়াবা নিয়ে কারাগারে ঢুকতেই হবে। তাছাড়া মোস্তফা একজন দাগি ইয়াবা কারবারি বলেও অভিযোগ তুলা হল। এজন্য ১০ লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা তা চিন্তা করা যেতে পারে। সর্বশেষ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।

মোস্তফা জানান-‘আমি ডায়াবেটিস রোগি। দিন দু’বার ইনস্যুলিন নিতে হয়। আমাকে আটকের খবরে রাস্তায় শুয়ে রয়েছে মা। আতœীয় স্বজন ডায়াবেটিসকে ভয় পেয়ে নগদ টাকা রাতারাতি জোগাড় করে আমাকে ছাড়িয়ে নেয়।’ থানার ক্যাশিয়ার আলমগীর অবশ্য গত শনিবার দোকানে এসে জানায়-মোস্তাককে ধরতে গিয়েই পুলিশ মোস্তফাকে তুলে নিয়ে গেছে। মোস্তফা তার জবানীতে বলেন-তাকে থানার যে বন্দীশালায় আটকিয়ে রেখেছিল সেখানে আরো ৪/৫ জনকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। তাদের একই রাতে একজন কে দুই লাখ ও অপরজনকে সাড়ে ৪ লাখ লাখে ছাড়া হয়।

এবারের দৃশ্যপট হোয়াইক্যং ফাঁড়ি। কেবল এক দিনের ঘটনার বিবরণ এসব। গত ৫ জুলাই বিকালে ফাঁড়ির ক্যাশিয়ার হাসানুল করিম উলুবনিয়া রাস্তার মাথা থেকে তুলে নিয়ে যায় হোয়াইক্যং এর এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আহমদকে। তিনি একজন ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী। প্রতি কেজি ৭০০ টাকা মূল্যের ৬১ কেজি চিংড়ি মাছের টুকরি নিয়ে কক্সবাজারমুখি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। ফাঁড়ির ক্যাশিয়ার তাকে তুলে নেওয়ায় হাফেজের চিংড়ি ভর্ত্তি টুকরিটাও পড়েছিল উলুবনিয়া রাস্তার মাথায়। এসব মাছও পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।

হোয়াইক্যং ফাঁড়ির এসআই মুফিজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা ও মাছ ব্যবসায়ী হাফেজকে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারির অভিযোগ এনে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে দেড় লাখ টাকায় মুক্তি পান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের তৃণমূলের এই অকুতোভয় কর্মী হাফেজ। হাফেজ আমাকে জানান-জীবনে ইয়াবার কারবার করিনি। টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশরও বলেছেন-একদম ফ্রেশ দলীয় কর্মী হাফেজ। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমার অভিযোগও নেই।

এর আগে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি আবদুল মজিদ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ঘনিষ্টজন পরিচয় দিয়ে উনার আমলেই মূলত থানাটিতে ওপেন গ্রেফতার বাণিজ্য শুরু করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে তদন্ত আসার পরও কোন সাক্ষ্য-সাবুদ পাওয়া যায়নি। এমনকি টেকনাফ থানা পুলিশের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দেওয়া লোকজনও কেউ ওসি মজিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদানে সাহস করেননি। কিন্তু সেইদিন এখন পাল্টে গেছে বলে মনে হয়। মানুষ এখন ঘুরে দাঁড়াতে চায়। গত ক’দিনে অনেক ভুক্তভোগি আমাকে নানাভাবে তথ্য দিয়েছে। হতে পারে সেইসব তথ্যে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণও থাকা অসম্ভব নয়। তাই এসব তথ্য যাচাই না করে প্রকাশ করছি না।

অপরাধ জনক কৃতকর্মের বিচার হবে আদালতে প্রকাশ্যে। টেকনাফ থানার অন্ধকার প্রকোষ্টে চোখ বেঁধে কোন অপরাধীর বিচার করা যায়না। অপরাধের বিচার মানে লাখ লাখ নগদ টাকা আদায় করা নয়।
অপরাধ জনক কাজে জড়িতদের আইন সঙ্গত ভাবে আটকের পর তাদের আইনের কাঠামোর মধ্যেই চালান করা সর্বাগ্রে দরকার আদালতে। এটাই চিরাচরিত নিয়ম।

তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ, সাক্ষী এবং জব্দ করা আলামত সহ আদালতে উপস্থাপন করা দরকার । ব্রিটিশ আমলে প্রণীত দন্ডবিধি এবং কার্যবিধি আইন সহ মাদক সহ সংশ্লিষ্ট আইনে বিচার হবে অপরাধীর। হোক না তিনি ইয়াবা কারবারি, হুন্ডি কারবারি এবং মানব পাচারকারি। টেকনাফ থানায় চলমান ‘গ্রেফতার বাণিজ্য’ চলাকালীন সময়ে এরকম কতজন তালিকাভুক্ত কারবারিকে ধরে চালান করা হয়েছে-তারও পরিসংখ্যান জানা দরকার।

টেকনাফ থানায় চলমান ‘গ্রেফতার বাণিজ্য’ নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন তৈরির জন্য অনুসন্ধান চালানোর সময় থানা-পুলিশের সাথে ঘনিষ্টতা বজায় রাখেন এরকম ব্যক্তিরাও আমাকে বার বার একটি কথা বলেছেন। যা আমার কাছে ছিল এক রকম অবিশ্বাস্য। বলা হয় এক রাতেই লাখ লাখ টাকা। এমনকি ২০/২৫ লাখ টাকা আদায়ের রাতও টেকনাফ থানায় রয়েছে। গত ৫ জুলাই তারিখের কেবল এক রাতের ঘটনা নিয়ে যেসব ভুক্তভোগিরা সাহস করে প্রতিবাদ করছেন এবং সেই বিভীষিকাময় ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন সেই হিসাবে আমার কাছে এতদিন যা অবিশ্বাস্য ছিল তাই ঘটেছে।

যেমন ৫ জুলাই রাতে টেকনাফ থানায় দুইজন মোবাইল বিকাশ কর্মী তাদের নিকট ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদানের কথা জানিয়েছেন আমাকে। তাদের একজনের স্বীকারোক্তি মতে অপর ২ জনের নিকট আদায় করা হয়েছে আরো সাড়ে ৬ লাখ টাকা। এছাড়াও হোয়াইক্যং ফাঁড়িতে এসআই মুফিজের অপারেশনে আওয়ামী লীগ কর্মী হাফেজের নিকট থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। যদিওবা থানার এসআই এবং ওসি এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। তবুও ঘটনা মিথ্যা হলেও এক রাতে আদায়ের পরিমাণ ছিল ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা। অবশ্য একই রাতে বন্দিশালায় আটক ব্যক্তিরা যাদের সাথে আমার যোগাযোগ হয়নি তাদের হিসাব এখানে আনা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টেকনাফ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল বশর গত ৫ জুলাই কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সহ পুলিশ হেড কোয়ার্টারে দেওয়া এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাতে তিনি টেকনাফের আওয়ামী লীগ নেতা সহ নীরিহ ব্যক্তিদের ইয়াবা কারবারির অভিযোগে ধরে নিয়ে ৪ জনের নিকট থেকে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা আদায় করার অভিযোগ জানিয়েছেন।

সমাজ যখন নৈরাজ্যকর অবস্থার দিকে ধাবিত হয় তখন কাউকে না কাউকে অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ জানাতে হয়। সমাজের লাগাম টেনে ধরার জন্যই এ প্রতিবাদ। কক্সবাজারে গত ৬ মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসেও কক্সবাজারের মানুষগুলোর জন্য দরদ দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন-কক্সবাজারের বদনাম রয়েছে। এখান থেকেই নাকি ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ে দেশের আনাচে-কানাচে। প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করে বলেছেন-ইয়াবায় জড়িত ব্যক্তি যতই ক্ষমতাবান হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর পর কক্সবাজারের টেকনাফ এসেছেন খোদ পুলিশের আইজিপি। তিনিও হুংকার দিয়ে গেছেন ইয়াবার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঘুরে গেছেন কক্সবাজার। খোদ জাতির জনকের কন্যা এবং সরকার প্রধান যেখানে ইয়াবা কারবারিদের মূলোৎপাটনের কথা বলছেন সেখানে কিনা টেকনাফ থানায় এসব হচ্ছেটা কি ? অন্তত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব্রাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ বাহিনীর প্রধানের সুনাম ও ভাবমুর্তি রক্ষার স্বার্থেই টেকনাফ থানার এরকম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার। আর আমরা যে যেখানে যে অবস্থায় রয়েছি, সবারই উদ্দেশ্য হওয়া প্রয়োজন-ইয়াবার আগ্রাসন, হুন্ডি প্রতিরোধ এবং মানবপাচার চিরতরে বন্ধ হোক।

দৈনিক কালের কন্ঠে গত ১৪ জুন তারিখের সংখ্যায় পুলিশ বাহিনীর একজন সৎ অফিসারের জীবনাল্লেখ্য নিয়ে আমি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করি। ‘ব্যতিক্রমী পুলিশ কর্মকর্তার জীবন গল্প’ শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ইতিমধ্যে অনলাইস-ফেসবুকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি গতরাত পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি ফেসবুকে শেয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজারে। আমার উদ্দেশ্য ছিল যারা দূর্নীতিগ্রস্থ তাদেরকে এই সৎ পুলিশ অফিসারের দিকে ধাবিত করা। এ জন্যই এরকম প্রতিবেদনটি প্রকাশ।

তাই টেকনাফ থানার যে সব অফিসারের বিরুদ্ধে গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তাদের প্রত্যেকের সাথেই আমার আলাপ কালে আমি সৎ অফিসারের প্রতিবেদনটি পড়েছেন কিনা জানতে চেয়েছি। টেকনাফ থানায় ৩৭ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন ১৮ জন অফিসার। তাদের মধ্যে মাত্র ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ‘গ্রেফতার বাণিজ্যের’ অভিযোগ উঠেছে। দেশের ২ লাখ ৫ হাজার পুলিশের একটি দক্ষ বাহিনীর সুনাম টেকনাফ থানার এই মাত্র ৬/৭ জনের জন্য কিছুতেই ভুলুন্ঠিত হতে দেওয়া যায়না।

লেখক  তোফায়েল আহমদ, সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক কালের কন্ঠ ও আর্ন্তজাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি ও এসোসিয়েটেড প্রেস-এপি’র ষ্ট্রিঙ্গার। [email protected]314358

পাঠকের মতামত: